সংস্কৃতি কী?

এই পর্বে সংস্কৃতি বিষয়ে নৃবিজ্ঞানের সাধারণ ধারণাগুলি উপস্থাপন করেছেন উম্মে সুমাইয়া (পরী)

সংস্কৃতি হলো সমাজে বসবাসকারী মানুষের সম্পূর্ণ জীবন প্রণালীর পরিপূর্ণ চিত্র। মানুষ সামাজিক এবং উত্তরাধিকার সুত্রে যেসব কলাকৌশল,ধ্যানধারণা, ন্যায়বোধ, আচার-আচরণ, অভ্যাস ও জ্ঞান লাভ করে তাকে নৃবিজ্ঞানে সংস্কৃতি বলা হয়। তবে সামাজিক নৃবিজ্ঞানে সংস্কৃতি আরো ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। আমরা এই আধুনিক যুগে খুব সহজভাবেই Unclutured শব্দটি ব্যাবহার করি। নৃবিজ্ঞান মনে করে মানবজীবনের সবকিছু নিয়েই সংস্কৃতি গড়ে উঠে। Uncultured বলে কোন কথা নেই। সংস্কৃতি ছাড়া কোন জনগোষ্ঠী দেখা যায় না।  সব জনগোষ্ঠীই নিজের মতো করে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশ নেয়। 

সংস্কৃতি শব্দটির ইংরেজি প্রতিশব্দ Culture। এটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ ‘Colere’থেকে। যার অর্থ ‘চাষ’। অবস্থাভেদে এর বিভিন্ন ধরনের অর্থ দেখা যায়। যেমন, ইংরেজিতে কখনো Culture শব্দের অর্থ ধরা হয়, “The training and refinement of mind, taste and manners.” অর্থাৎ পরিশীলিত মন, মার্জিত রুচি ও ব্যবহার। Culture শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন ফ্রান্সিস বেকন,ষোল শতকের শেষার্ধে।আরও একটি মজার জায়গা আছে, Culture v/s culture, যেখানে c ছোট অক্ষরে এবং C বড় অক্ষরে লিখা হয়।Culture- কে মানুষের টিকে থাকার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হয়, এটি এক ধরনের মানব স্বভাব যা সব মানুষেই বিদ্যামান। অন্যদিকে culture বলতে বোঝায় যেটা একজন মানুষ নিদিষ্ট সংস্কৃতির প্রথা হিসেবে ধারন করে নিজের ভিতরে, যা অনান্য সংস্কৃতি থেকে আলাদা।

সংস্কৃতির কিছু সংজ্ঞা

নৃবিজ্ঞানী ফ্রাঞ্জ বোয়াস বলেন, সমাজের প্রচলিত আচার -অনুষ্ঠান এবং এই বৈশিষ্ট্যগুলোর প্রতি ব্যক্তিবিশেষের যে প্রতিক্রিয়া, এই দুইয়ের সংমিশ্রণে যা সৃষ্টি হয় তাই সংস্কৃতি। ম্যালিনোস্কির মতে সংস্কৃতি হচ্ছে মানুষের আপন কাজের সৃষ্টি, যার মাধ্যমে সে তার উদেশ্য সাধন করে।

লোয়ির মতে সংস্কৃতি একটি বংশগত উপাদান। এটি উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যায়। একটি স্বতন্ত্র লোক তার সমাজ থেকে যে বিশ্বাস, রীতি, কলাকৌশল, খাদ্যভাস ও দক্ষতা লাভ করে তার সমষ্টিকে আমরা সংস্কৃতি বলে জানি। এগুলো তার নিজের সৃষ্টি না, বরং শিক্ষার মাধ্যমে অতীত থেকে উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া বস্তুর মতো তার কাছে এসেছে।

এনিমেশন শিখতে চান? ক্লিক করুন!

সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যসমূহ

আমেরিকান নৃবিজ্ঞানী Melville J.  Herskovits তাঁর Cultural Anthropology(1955)  গ্রন্থে সংস্কৃতির কতকগুলা বৈশিষ্ট্য তুলে ধরেন। তার মতে, 

১.সংস্কৃতি শিখতে বা অর্জন করতে হয়।

২.মানবিক অস্তিত্বের জৈবিক,পরিবেশগত মনস্তাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক উপাদান হতে সংস্কৃতি গৃহীত হয়। 

৩.সংস্কৃতি কাঠামোভিত্তিক।

৪.সংস্কৃতি তার বিভিন্নমূখী অংশ অনুযায়ী বিভাজনযোগ্য।

৫.সংস্কৃতি পরিবর্তনীয়।

সংস্কৃতি শিখতে হয়(Culture is Learned)

মানুষের আচার-ব্যবহারই হচ্ছে সংস্কৃতি। কোন গোষ্ঠীর পূর্ববর্তী সদস্যদের কাছ থেকে পরবর্তী সদস্যরা সংস্কৃতির  শিক্ষা গ্রহণ করে। এটি কেবল মানুষের জন্মসূত্রে প্রাপ্ত বা জৈবিক ভাবে সঞ্চারিত বৈশিষ্ট নয়। অন্যকথায় বলা যায়, কোন ব্যক্তি জন্মের পর সমাজের কাছ থেকে সমষ্টিগতভাবে শিক্ষালব্ধ আচরণ এবং একই সময় নিজ চমৎকার গুণের মাধ্যমে উদ্ভাবিত নতুন নতুন আচরণ ও স্বভাব অর্জন করে। নবজাত শিশুর কোন সাংস্কৃতিক ভিত্তি থাকে না। যখন সেই শিশু শারীরিকভাবে নড়াচড়া করতে শুরু করে, নিঃসন্দেহে সেগুলো তার জন্মসূত্রে প্রাপ্ত ক্ষমতা। কিন্তু যখন সে তার পরিচিত পরিবেশের অন্যান্য লোকদের অনুসরণ করে, কোন সংকেত ব্যবহার শুরু করে বা কোন অর্থপূর্ণ মিথস্ক্রিয়ার লিপ্ত হয়,তখন সেই সব কাজকে শিক্ষালব্ধ সংস্কৃতির অন্তর্গত করা হয়। কোন কোন জীবজন্তুর মধ্যেও এই ধরণের গুণ দেখতে পাওয়া যায়, তবে তাদের এই গুণগুলো অনেকটাই সীমাবদ্ধ । স্বতন্ত্র সংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলো স্বভাবের সমষ্টিগত ও শিক্ষালব্ধ বিভিন্ন পথের বিশেষ নিদর্শনস্বরুপ। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন পরিবেশে গড়ে উঠে বলে সংস্কৃতিরও বিভিন্নতা দেখতে পাওয়া যায়।

সংস্কৃতি ধারণালব্ধ জিনিস(Culture is ideational)

এটাও সংস্কৃতির একটি শিক্ষালব্ধ বৈশিষ্ট্য। বারংবার তিরস্কার, যুক্তি,পরামর্শ প্রভৃতি দ্বারা কোন কিছু করতে প্ররোচিত বা ধারণা জন্মাবার মাধ্যমে যুগের পর যুগ শিক্ষা দেওয়া বা জ্ঞান লাভ করার এই গুণ সংস্কৃতির একটি বিশেষত্ব।  এইক্ষেত্রে ভাষা একটি অতিপ্রয়োজনীয় মাধ্যম। একটি উদাহরণ দিয়ে এটি স্পষ্ট করা যায়।

আগেই বলা হয়েছে শিশুরা মূলত জন্মের পরপরই সংস্কৃতি লাভ করে না। সুতরাং জন্মের পর যখন কোন শিশু কেঁদে উঠে, তখন তার এই কান্নাকে সংস্কৃতির অংশ বলা যায় না। কারণ এটি জৈবিক দিক থেকে পূর্বনির্ধারিত। কিন্তু বারবার ‘মা’ ডাকটি শুনার মাধ্যমে শিশুটি যখন ‘মা’ শব্দটি উচ্চারণ করতে শেখে, তখন এটা সংস্কৃতির একটি অংশ। এটা সে শিক্ষনের মাধ্যমে লাভ করেছে।  কোন সংস্কৃতি সমাজ ছাড়া টিকতে পারে না। আন্তঃসম্পর্কবিশিষ্ট স্বতন্ত্র লােকদের সমম্বয়ে গঠিত দলকে সমাজ বলা হয়। সমাজের অধিকাংশ লােক যখন কোন কাজ করতে অভ্যস্ত  হয়, তখন তাকে সামাজিক বলা হয় (সাংস্কৃতিক অভ্যাস হচ্ছে কতিপয় ব্যবহারের সমাবেশ: এটি স্বতন্ত্র  ব্যবহার বা অভ্যাস নয়)। সমাজের সদস্যদের স্বতন্ত্র  ব্যবহার বা আচরণ  থাকতে পারে, কিন্তু সংস্কৃতির দিক থেকে বিবেচনায় সব ব্যবহারের সামগ্রিক  রূপকে ধরা হয়। উদাহরণ স্বরপ বলা যায় যে, শ্রেণীকক্ষের মধ্যে ছাত্র বা ছাত্রীদের সমপ্রকৃতির ব্যবহার থাকে, কিন্তু শ্রেণীকক্ষের বাইরে শিক্ষকদের  প্রতি শিক্ষার্থীভেদে  স্বতন্ত্র  ব্যবহার প্রকাশ পায়।

সংস্কৃতির আদর্শ ও ধারণা

সমাজ  প্রচুর সম্ভাবনাময়, তারসাথে সমাজে সংস্কৃতির প্রভাবও যথেষ্ট শক্তিশালী। সমাজ সবসময়  তার সংস্কৃতি  দ্বারা প্রভাবিত এবং আদর্শ সংস্কৃতির  প্রভাবে  একটি  আদর্শ সমাজ গড়ে উঠার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সেগুলােকে সাধারণ ব্যবহারে প্রকাশ করা যেতে পারে। আদর্শ নমুনা সধারণত মনােনীত করা হয় এবং সমষ্টিগত মঙ্গল হিসেবে গণ্য করা হয়। জনগণের ধারণার বাইরে কেউ অন্যতাবে কাজ করতে উদ্যত হলেও স্বতন্ত্র লােকটি বুঝতে পারে যে, সে ওই সংস্কৃতির কাঠামোর মধ্যেই কিছু একটা করছে, এবং সেই কাঠামো তার কর্মকান্ডকে প্রভাবিত করতে থাকে।  এক সময় বাংলাদেশের শহরবন্দরের অনেক তরুণ ও যুবক ‘ছিনতাই’ কাজে লিপ্ত হয়ে উঠেছিল। সুতরাং আমরা বলতে পারি যে, সেগুলোও প্রকৃত অর্থে  সংস্কৃতি অর্থাৎ সমাজে প্রকৃতপক্ষে যা ঘটে সেসব- ই সংস্কৃতি। 

আমরা জানি যে, ‘আমরা যা করি তাই সংস্কৃতি’, যদিও তা আদর্শ সংস্কৃতি নয়।আমাদের সমাজ ছিনতাই অনুমােদন করে না, আসলে সমাজ যা অনুমোদন  করে তা যদি ঘটে তাহলে সেটা আদর্শ সংস্কৃতি হিসেবে গৃহীত হয় ।যেমন  আমাদের সমাজে সালাম দেওয়া, নমস্কার করা এগুলাকে আদর্শ সাংস্কৃতির অংশ ধরা হয়৷ সংক্ষেপে বলতে হয় যে, কি ঘটেছে তার প্রতি জোর না দিয়ে, যা সমাজে ঘটা উটিত ছিল বলে মনে করা হয়, তার প্রতি জোর দেওয়া। যেমন একটা ফর্মাল প্রোগ্রামে কেও লুঙ্গি পরলে তা সবাই হয়তো ঠিক ভাবে নিবে না ,কারন আমাদের সমাজে সংস্কৃতির একটা আদর্শ মান বা এক্সপেকটেশন থাকে, যেমন এখানে সবাই ফরমাল ড্রেস এক্সপেক্ট করে। এভাবে সমাজে একটি আদর্শ সংস্কৃতির ধারণা গড়ে উঠে। তবে সমাজের সবাই যে সেই সংস্কৃতিতে অংশ নেয় এমন নয়, ক্রমাগত সেখানে বিভিন্ন  বিষয় নিয়ে নানাপক্ষের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলতে থাকে৷ 

সংস্কৃতির বিশ্বজনীনতা/সর্বজনীনতা(Cultural Universals)

মানব সংস্কৃতিতে বৈচিত্র‍তা অত্যন্ত স্পষ্ট । আচরণের ধারা এক সংস্কৃতি থেকে অপর সংস্কৃতিতে ভিন্ন। এমনকি পশ্চিমা সমাজগুলােতে যেগুলাে স্বাভাবিক’ আচরণ বলে বিবেচিত অন্য সংস্কৃতিতে তা অস্বাভাবিক লাগতে পারে।  উদাহরণস্বরুপ, আধুনিক পশ্চিমা দেশগুলােতে শিশু হত্যা জঘন্য অপরাধ। অপরদিকে, চিরায়ত চীনা সংস্কৃতিতে প্রায়শই কন্যাশিশুকে জন্মকালে হত্যা করা হতো, কারণ কন্যা শিশুদেরকে পরিবারের সম্পদ না ভেবে বােঝা হিসেবে দেখা হতাে। পশ্চিমা দেশে কোথাও কোথাও উটপাখি ভক্ষণ করে কিন্তু বিড়াল ছানা বা কুকুর ছানার মাংস ভক্ষণ করে না, অথচ বিড়াল ও কুকুর উভয়ই পুথিবীতে বেশ কিছু দেশে খাদ্য হিসেবে খুবই উপাদেয়।  যেমন হিন্দুরা সাধারণত গরুর মাংস ভক্ষণ করে না ,আবার মুসলমানরা খাবার হিসেবে গরুর মাংস ভক্ষণ করে। এই সমস্ত বিভিন্ন প্রকার আচরণের দিকটি হলাে সাংস্কৃতিক পার্থক্যের ভিত্তি যা একটা সমাজকে অন্য সমাজ থেকে পৃথক করে।

সংস্কৃতির এতসব বিচিত্রতা থাকা সত্ত্বেও সকল সমাজই বিকাশ লাভ করেছে কিছু সাধারণ আচার অনুষ্ঠান ও বিশ্বাসের ভিত্তিতে যাকে সংস্কৃতির বিশ্বজনীনতা বা সর্বজনীনতা(Cultural Universals) বলে। 

সমাজবিজ্ঞানী  এলেক্স থিও মনে করেন,  সাংস্কৃতিক বিশ্বজনীনতা বলতে এমন সব কর্মকান্ড বুঝায় যার মাধ্যমে সকল সংস্কৃতির মানুষ তার চাহিদা মেটায়। Henry L. Tischler- এর মতে, সাংস্কৃতিক বিশ্বজনিনতা বলতে শ্রমের বিতরণ, অযাচার নিষিদ্ধকরণ, বিবাহ,পরিবার, রাইটস অফ পেসেজ এবং মতবাদকে বুঝায়।’

সব মানুষ অনেক ধরনের অভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। এসব সমস্যা সমাধানের মানবিক প্রচেষ্টা বিভিন্ন সংস্কৃতিতে প্রতিফলিত হয়, এর মাধ্যমেই মানব  জীববিদ্যার প্রকৃতি এবং মানবিক অবস্থান নির্ধারিত হয়। বস্তুত অনেক সংস্কৃতির বিশ্বজনীনতা হচ্ছে এমনসব জিনিস যেগুলো অতি প্রয়ােজনীয় মানবীয় চাহিদার পূরণ করে। যেমন- জানসাধারণের খাদ্য, বন্ত্ৰ ও বাসস্থানের চাহিদা। প্রখ্যাত নৃবিজ্ঞনী জর্জ মারডাক এবং ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযােগীরা সংস্কৃতির বিশ্বজনীনতার ৮৮ টি ক্যাটাগরির একটি তালিকা প্রস্তুত করেন। এগুলাের অন্তর্ভুক্ত হলাে আ্যাথলেটিকস স্পোর্টস,  রান্নাবান্না, অন্তেষ্টিক্রিয়া,  চিকিৎসাবিদ্যা,সম্পত্তি,রাজনৈতিক আচরণ, যৌন বিধিনিষেধসহ আরো কিছু উপাদান৷ 

মারডাক সর্বজনীনতা হিসেবে সংস্কৃতির আচার-অনুষ্ঠানের যে তালিকা তৈরি করেন সেগুলাে সকল সংস্কৃতিতে লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সামাজিক রীতিনীতি, প্রথা,রেওয়াজ, লােকরীতি-লােকাচার – এসবের প্রকাশভঙ্গি এক সংস্কৃতি হতে অন্য সংস্কৃতিতে ভিন্ন হয় । উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একটা সমাজের সদস্যগণ ‘স্বীয় পছন্দ’ বিবাহের ধরনকে উৎসাহিত করতে পারেন। আবার অন্যান্যরা অভিভাবক দ্বারা সংঘটিত বিবাহের ধরনকে শুরুত্ব দিতে পারেন।  সুতরাং সংস্কৃতির বিশ্বজনীনতার ক্ষেত্রে বলা যায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড প্রায় সব সমাজে  একইভাবে দেখা যায়, কিন্তু তা প্রকাশ করার ধরন আলাদা।যেমন সকল  সংস্কৃতিতে মৃতব্যক্তির  শেষকৃত্য আয়োজন  করা হয়, যদিও ভিন্ন ভিন্ন ভাবে। কিন্তু প্রধান উদেশ্য এক, তাই বলা যায় সংস্কৃতি বিশ্বজনীন একটা রূপ আছে। 

 সাংস্কৃতিক পরিবর্তন

সাংস্কৃতি কখনো স্থির বা অপরিবর্তনীয় নয়। সবসময় এটি পরিবর্তিত হচ্ছে। প্রাচীনকাল থেকে এখন অবধি মানুষের সংস্কৃতি  স্থান কাল পাত্র ভেদে পরিবর্তিত হয়ে আসছে। পৃথিবীতে কোন সংস্কৃতিই একবারে স্থির নয়। পশুশিকারের উপর নির্ভর করা গোষ্ঠী কিংবা বিভিন্ন আদিবাসী গোষ্ঠীদের সংস্কৃতিও ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়৷ 

সাংস্কৃরিক পরিবর্তনের অনেকগুলো কারণ দেখা যায়। কখনো দুইটি সংস্কৃতির মোকাবিলার ফলে দুই সংস্কৃতিই পরষ্পরকে প্রভাবিত করতে থাকে, কখনো এক সংস্কৃতি অন্য সংস্কৃতির প্রভাবে একরৈখিকভাবে প্রভাবিত হয়। (যেমন ধরা যাক বাঙ্গালি তরুন-তরুনীদের উপর নেটফ্লিক্সের প্রভাব),  আবার স্বাধীনভাবে উদ্ভাবনের মাধ্যমে সংস্কৃতি পরিবর্তন হতে পারে। এইক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন যেমন আধুনিক সেচব্যবস্থার কথা বলা যায়৷