বৃটিশ ব্যাপ্তিবাদ

[‘থিওরি’ সিরিজে বৃটিশ ব্যাপ্তিবাদ নিয়ে লিখেছেন আতেকা জোয়ার্দার]

ঊনবিংশ-বিংশ শতাব্দীর নৃবৈজ্ঞানিক পরিসরে ব্যাপ্তিবাদ প্রচলিত ছিল। অনেকে ব্যাপ্তিবাদকে বিবর্তনবাদের বিপরীত মতবাদ হিসেবে বিবেচনা করেন। কিন্তু, খেয়াল করলে দেখা যাবে দুটি মতবাদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। ব্যাপ্তিবাদের মূল লক্ষ্য ছিল বিভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক সাদৃশ্যের কারণ অনুসন্ধান করা। ব্যাপ্তিবাদীদের মতে বিবিধ সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন সময়ে বিকাশ লাভ করে এবং পরবর্তীকালে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের মতানুসারে, সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য মূলত অভিবাসনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। দুইটি স্থানের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের সাদৃশ্যতার জন্য তারা স্থান দুটির মধ্যকার যোগাযোগের সম্ভাব্যতা বিবেচনায় রাখেন। তাই, ব্যাপ্তিবাদীদের অভিমত সংস্কৃতি কালক্রমে বিকশিত হয়েছে অভিবাসন ও সংযোগের মাধ্যমে।

ব্যাপ্তিবাদী  ও তাদের অবদানকে পদ্ধতিগতভাবে আলোচনার জন্য আমরা দুইভাবে আলোচনা করতে পারি।

যথাঃ 

  1. ব্রিটিশ ব্যাপ্তিবাদ
  2. জার্মান ব্যাপ্তিবাদ

ব্রিটিশ ব্যাপ্তিবাদীরা ছিলেন গোড়া ব্যাপ্তিবাদী। তারা সাংস্কৃতিক কেন্দ্র তত্ত্বে বিশ্বাসী ছিলেন। অপরদিকে জার্মান ব্যাপ্তিবাদীরা বিশ্বাস করতেন কোন একক কেন্দ্র নয় বরং একই সময়ে বিভিন্ন জায়গায় সংস্কৃতি স্বাধীনভাবে বিকাশ লাভ করেছিল এবং তা পরবর্তীতে অভিবাসনের সাথে সাথে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রথম পর্বে ব্রিটিশ ব্যাপ্তিবাদ নিয়ে আলাপ করবো।

ব্রিটিশ ব্যাপ্তিবাদ

ব্রিটিশ ব্যাপ্তিবাদীরা ছিলেন গোড়া। তারা মূলত  প্রাচীন মিশরকে সংস্কৃতির জন্মস্থান হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং মনে করতেন মিশরই হল সভ্যতার  কেন্দ্রস্থল। এখান থেকেই সভ্যতা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েছে। যে সব ব্যাপ্তিবাদীরা এই ধরনের তত্ত্ব দিয়েছিলেন, তাদের  মাঝে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলেন জি ই স্মিথ, ডব্লিউ জে পেরি  এবং ডব্লিউ এইচ আর রিভার্স। তাদের রচনাবলি ও আবিষ্কারসমূহ মূলত মিশরকেন্দ্রিক হওয়ায় তাদেরকে মিশর তত্ত্ববিদও বলা  হয়। 

  • জি.ই স্মিথ (১৮৭১-১৯৩৭): 

গ্রাফটন ইলিয়ট স্মিথ ছিলেন একজন এনাটোমিস্ট। কাজের সুবাদে তিনি একবার মিশর গমন করেন। সেখানে গিয়ে তিনি মিশরের প্রাচীন সভ্যতার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে উঠেন। মিশর ভ্রমণের পর তিনি ইংল্যান্ডে এসে সেখানকার  “স্টোন হেজ” এর মত মেগালিথ স্থাপনার সাথে মিশরের  সূর্য উপাসনার সাথে  সম্পর্কিত বড় পাথরের স্মৃতি স্তম্ভের মিল  খুঁজে পান। এখান থেকে নানা ভাবনা  চিন্তার পর তিনি এই উপসংহারে  পৌঁছান যে, ইংরেজদের এসব স্মৃতি স্তম্ভ গুলো মূলত মিশরের পিরামিড এবং মাস্তাবাসের ( প্রাচীন মিশরীয় সমাধিগৃহ) অনুকরণ ছিল। এছাড়া তিনি মায়ো পিরামিড, জাপানিজ প্যাগোডা, কম্বোডিয়ান মন্দির পর্যবেক্ষণ করেন এবং মিশরীয় আদিরূপ লক্ষ্য করেন। সর্বোপরি, তিনি মিশরকে  সভ্যতার প্রাচীন কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করেন  এবং বলেন যে, মেগালিথ ও স্মৃতি স্তম্ভ গুলোর সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য গুলো খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ অব্দ থেকে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।

 
তার লিখিত গ্রন্থ ‘The Origin of  Civilization’ (1928) এ তিনি মিশরকে সভ্যতার  উৎপত্তি স্থল হিসেবে চিহ্নিত করেন। এছাড়া এই গ্রন্থে তিনি কৃষির উদ্ভাবন, নদী নিয়ন্ত্রণ, মৃৎপাত্র, তাঁত, চরকা, লাঙ্গল, লেখা, শহর, আইন, সরকার প্রতিষ্ঠা,   সূর্যের উপাসনা, মৃতদেহের মমি করা, মূল্যবান ধাতুর জন্য ভ্রমণ ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করেছেন। এই বইতেই তিনি তার ব্যাপ্তিবাদ তত্ত্বের প্রাথমিক তিনটি ধারণা উল্লেখ করেন।

১. মানুষ উদ্ভাবনী চিন্তা করতে অপারগ এবং সংস্কৃতি কেবল অনুকূল পরিবেশে বিকাশ লাভ করে।

২. এই ধরণের অনুকূল পরিবেশ কেবল প্রাচীন মিশরে ছিল।

৩. সভ্যতা পরিব্যাপ্ত হওয়ার সময় স্বাভাবিকভাবেই যৌগিক রুপ ধারণ করে।

তার লিখিত আরেকটি  গ্রন্থ হলো ‘DIFFUSION OF CULTURE’ (1933) । মিশর থেকে যে সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে, সে কথা স্মিথ এই এই গ্রন্থে তুলে ধরেছেন।  তখনকার সময়ে অনেক “আদিম” বা “অশিক্ষিত” সমাজ ছিল,যাদের মধ্যে মিশরীয় সভ্যতার ছাপ ছিলো না। স্মিথ তাদেরকে  ‘NATURAL MAN’ বা ‘প্রকৃতির মানুষ’ বলে সম্বোধন করেছেন।  তাদের জীবনেও বিপ্লব ঘটে যখন তারা মিশর থেকে প্রাপ্ত সভ্যতাগত বৈশিষ্ট্য গুলো অভিবাসন এর মাধ্যমে গ্রহণ করে। 

মূলত, স্মিথ এটাই বলেছেন যে, মিশরেই সর্বপ্রথম সভ্যতা আবিষ্কার হয় এবং সেখান থেকেই সংস্পর্শ , যোগাযোগ ও স্থানান্তরের মাধ্যমে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। এভাবে তিনি স্বাধীন উদ্ভাবন, মানসিক ঐক্য, একাধিক উৎপত্তিস্থল বা বহুকেন্দ্রিক  উদ্ভাবন, একরৈখিক বিবর্তন, বেঁচে থাকার ধারণাকে লোপ করে দেন। এসব কারণে তাকে চরম ব্যাপ্তিবাদী  হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। 

  • উইলিয়াম জেমস পেরি (১৮৮৭-১৯৪৯ ):

উইলিয়াম জেমস পেরি স্মিথ এর  দেখানো পথকেই সমর্থন করেছেন। তাই তাকেও  ‘Egyptologist’ বলা হয়। তিনি মালয় অঞ্চলে চমৎকার  গবেষণা করেছিলেন এবং বই লিখেন। এছাড়া তিনি মিশর ভ্রমণ করেন এবং প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কার্যে আগ্রহী হয়ে পড়েন এবং স্মিথের তত্ত্বীয় মূলনীতিতে তিনি অন্ধভাবে সমর্থন প্রদান করেন। কায়রোতে সূর্য মন্দিরের বিদ্যমানতা দ্বারা পেরি এত বেশি প্রভাবিত হয়েছিলেন যে ‘দি চিলড্রেন অব সান’ নামক একটি পুস্তক রচনা করেন এবং ১৯২৩ সালে লন্ডন থেকে তা প্রকাশিত হয়। এই পুস্তক প্রকাশের পর তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে যান এবং বইটি বেশ কয়েকবার পুনঃমুদ্রিত ও ব্যাপকভাবে পঠিত হয়। এই পুস্তকে তিনি জোর প্রদান করেন যে ‘সংস্কৃতির প্রবাহ সর্বদা অবমূল্যায়নকে সাথে করে চলে’ এবং ‘কোনো শিল্পকলা বা চারুকলা বাস্তবে স্থায়ী নয়।’ তিনি এটাও উল্লেখ করেন যে প্রাচীন মিশর ছিল বিশ্বের একমাত্র সাংস্কৃতিক জন্মস্থান। তার বইতে  তিনি সূর্যের উপাসনা নিয়ে কথা বলেন এবং একে উপাসনার প্রাচীন রূপ হিসেবে  চিহ্নিত করেন যা মিশরে উৎপন্ন হয়ে সারা বিশ্বে ব্যাপ্ত হয়েছে। 

  • উইলিয়াম হালস রিভার্স: 

ডব্লিউ এইচ আর রিভার্স স্মিথের মতোই পেশায় একজন চিকিৎসক এবং জীবনের শেষ পর্যায় পর্যন্ত এই চরম ব্যাপ্তিবাদে আস্থাশীল ছিলেন। ১৮৯৮ সালে টরেস স্ট্রেইটের অভিযানে নৃবিজ্ঞানী দলের সাথে রিভার্স যুক্ত হন। সেখানে তিনি স্থানীয়দের মনস্তাত্ত্বিক সক্ষমতা (sensory capacity) পরীক্ষা করে বলেন যে, মানুষের চেতনের কোনো জাতিগত পার্থক্য নেই। ১৯১০ এর আগ পর্যন্ত তার কাজে ব্যাপ্তিবাদের কোন প্রভাবই দেখা যায়নি বা তিনিও নিজেকে ব্যাপ্তিবাদী হিসেবে পরিচয় দেননি। ১৯১১ সালে ব্রিটিশ এসোসিয়েশন ফর দ্যা এডভান্সমেন্ট অফ সাইন্সে তার “Ethnological Analysis of Culture” শিরোনামের পেপার উপস্থাপনের সময় তিনি নিজেকে ব্যাপ্তিবাদী বা Diffusionist হিসেবে পরিচয় দেন। তার গুরুত্বপূর্ণ  একটি মতামত হচ্ছে সাংস্কৃতিক বা সভ্যতাগত বৈশিষ্ট্যের যে শুধুমাত্র অগ্রগতি হয়েছে তা নয়, এগুলোর অধঃপতন বা অবক্ষয়ও হয়েছে। ‘The History of Melanesian Society’ (1914) তে তিনি দেখিয়েছেন, মেলানেশিয়ান আইল্যান্ডের মানুষজনের মাঝে ‘ক্যানু’র ( এক ধরণের পাতলা নৌকা। তাল গাছ দিয়ে বানানো নৌকার মত অনেকটা) প্রচলন নেই। কারণ ক্যানু তৈরি করার মানুষ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। কিন্তু এটা ছাড়া তারা বর্তমান বাসস্থান সম্পর্কে চিন্তাও করতে পারত না। এই বিলুপ্তির মাধ্যমে সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য বিলোপের প্রমাণ পাওয়া যায়। তবে, অন্য আরো ঘটনা ছিলো যা এত সহজে ব্যাখ্যা করা যাবে না, উদাহরণস্বরূপ রিভার্স উল্লেখ করেন, অস্ট্রেলিয়াতে একটি অতিক্ষুদ্র ভৌগোলিক অঞ্চলে সমরূপ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভিন্ন পাঁচ ধরনের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান বিরাজমান ছিল। তাঁর মতে, “simple” “ এবং “uninventive” মানুষের পক্ষে এরূপ বৈচিত্র্যতা বিকাশ করা অসম্ভব ছিলো। এ কারণে রিভার্স বলেন যে, তাদের মধ্যে ছোটখাটো মাইগ্রেশন  ঘটেছে। 

ন্যাটিভ  অস্ট্রেলিয়াতে  সংঘটিত অভিবাসনের প্রকৃতি সম্পর্কে রিভার্স আরও আলোকপাত করেন। ধারণা করা হয় ক্যানোয়তে করে কেবল পুরুষরাই এসেছিলো। পরবর্তীতে স্থানীয় নারীদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বংশবৃদ্ধি করে। তারা তাদের স্ত্রীদের ভাষা শিখতে বাধ্য হয়। ফলে, খুব দ্রুতই তাদের ভাষা বিলুপ্ত হয় এবং তাদের বংশধরদের মধ্যেও পূর্বপুরুষদের বৈশিষ্ট্যাবলী হারিয়ে যায়।  পুরুষেরা সম্পূর্ণরূপে তাদের স্বাগতিক সংস্কৃতিতে মিশে যায় এবং তাদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান ছাড়া সকল আদি অভ্যাস পরিত্যাগে কোনো আপত্তি ছিল না। রিভার্সের মতানুসারে তাদের (নতুন অভিবাসী লোক) চৰ্চিত এই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আচার অনুষ্ঠানের প্রতি এত বেশি শক্ত আবেগী সংযোগ ছিল যে তারা তা পরিত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং এভাবে রিভার্স অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানের ব্যাপক পার্থক্যের ব্যাখ্যা করেন। তবে আচার অনুষ্ঠান কীভাবে প্রথম স্থানে পৌঁছেছে এবং আদি অস্ট্রেলিয়ান গোষ্ঠীরা কেন তাৎক্ষণিকভাবে নিজেদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান পরিত্যাগ করেছে সেটার কোন ব্যাখ্যা তার লেখায় পাওয়া যায় না।

তাই ব্যাপ্তি মতবাদ গড়নের ক্ষেত্রে রিভার্স মূলত অভিবাসনের প্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করেন, যা আদিম অস্ট্রেলিয়াতে ঘটেছিল। যদিও স্মিথ, পেরি এবং রিভার্স তিনজনই তাদের বিশ্বাসে একমত ছিলেন যে উদ্ভাবনী শক্তি ছিল বিরল এবং সংস্কৃতির সাদৃশ্য কেবল অনুকরণের মাধ্যমেই ব্যাখ্যা করা যায়। 

ব্রিটিশ ব্যাপ্তিবাদের দূর্বলতা:

ব্রিটিশ ব্যাপ্তিবাদী-দের মতে মানুষ তেমন উদ্ভাবনী কোন প্রাণী নয় এবং  একই ধরনের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুকরণের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। এটা সত্য যে কিছু সংস্কৃতি কিছু উদ্ভাবন করার চেয়ে গ্রহণ করে বেশি, কিন্তু  তার মানে এই না যে, উদ্ভাবনগুলো একবারই হয়েছে বা নির্দিষ্ট জায়গায় হয়েছে। এই  পরিপ্রেক্ষিতে এই চিন্তাধারার ব্যাপ্তিবাদীদের ‘চরম ব্যাপ্তিবাদী’ বলে। 

আরেকটি ত্রুটি হলো – সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য গুলোর গুরুত্ব, অর্থ এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন কার্যবলী- এই ব্যাপার গুলো মাথায় না রেখেই ব্যাখ্যামূলক নীতি হিসেবে সবজায়গায় অ-উদ্ভাবনশীলতার কথা বলা। 

ব্রিটিশ ব্যাপ্তিবাদীদের  দৃষ্টিভঙ্গি ছিল পক্ষপাতদুষ্ট ও গোঁড়ামিপূর্ণ । তারা শুধুমাত্র মিশর ভ্রমণ করেছিলেন বলেই ধরে নিয়েছেন যে, এই মিশরই সভ্যতার কেন্দ্র যেখান থেকে বিশ্বের বাকি অংশ সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলো অনুকরণ করে নিয়ে ধারন করেছে। হয়তো, তারা ভারত ভ্রমণ করলে ভারতকেও সভ্যতার কেন্দ্র বিন্দু ভাবত। তারা মিশরকে সভ্যতার জন্মদাতা এবং সংস্কৃতির কেন্দ্র মনে করেছে, কিন্তু একই সময়ে আরো অনেক সভ্যতা বর্তমান ছিল। 

তাদের গোড়া অবস্থান, মিশর কেন্দ্রিকতার কারণে তারা ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানে শেষ দিকে ব্যাপক সমালোচিত হয়। তারা শুধু মাত্র সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের ব্যপ্তি নিয়ে আলোচনা করেছে যেটা সংস্কৃতির সাধারণ রুপ; সংস্কৃতির জটিল বিস্তারের দিকে মনোযোগ দেয় নি। সেইসাথে তারা বস্তুগত সংস্কৃতির (material culture) উপর দৃষ্টিপাত করতে গিয়ে  অবস্তুগত সংস্কৃতির (nonmaterial culture) দিকগুলো যেমন প্রথা, বিশ্বাস ইত্যাদি উপেক্ষা করে গেছেন। 

(চলবে)